শরীয়তপুর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নে নিবির (১১) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার
করেছে পুলিশ।
করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে সদর উপজেলার খিলগাঁও গ্রামের একটি বাগান থেকে মাটিচাপা অবস্থায় শিশু নিবিরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দুপরে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের জানান, সোমবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিবিরের দাদা মমীন আলী খান অভিযোগ দায়ের করেন, জাজিরা সময়কে জানান তার নাতি নিবিরকে কে বা কারা অপহরণ করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবী করছে।
অপহরণের সংবাদ পাওয়া মাত্র বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), অফিসার ইনচার্জ পালং মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের সমন্বয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কার্যক্রম শুরু করেন।
মোবাইল ফোনের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে সিয়ামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে অপহরণের কথা স্বীকার করে এবং তার সহযোগী শাকিল গাজী, তুহিন গাজী ও শাওনের নাম প্রকাশ করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাকিল, তুহিন ও শাওনকে আটক করে ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আজ ভোর ৫টার দিকে তারা স্বীকারোক্তি প্রদান করে যে, ঘটনার ৩ দিন পূর্বেই তারা নিবিরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার বিকাল অনুমান ৪টার পরে ভিকটিম নিবিরকে তার বাড়ির আশপাশ এলাকা থেকে কৌশলে একই গ্রামের জলিল খা’র ইটের ভাটা সংলগ্ন জনৈক আলী হোসেন খা’র বাড়ির পিছনে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। কিন্তু ভিকটিম নিবির সেখান থেকে চলে আসার জন্য ডাক চিৎকার করতে গেলে তাৎক্ষণিক অপহরণকারী সিয়াম, শাকিল ও তুহিন ভিকটিম নিবিরকে হাত পা চেপে ধরে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং লাশ মাটি চাপা দিয়ে গুম করে পালিয়ে যায়।
পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অপহরণকারীরা ভিকটিমের মায়ের মোবাইলে ফোন করে জানায়, তারা নিবিরকে অপহরণ করেছে। ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে তারা নিবিরকে ছেড়ে দিবে।
অপহরণকারীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ মঙ্গলবার সকাল ৬ টার সময় ঘটনাস্থল খিলগাঁও আলী হোসেন খা’র বাড়ির পিছনে নির্জন বাগানের গর্তের মধ্যে মাটিচাপা থেকে ভিকটিম নিবিরের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় পালং মডেল থানার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা হয়েছে এবং অধিক তদন্ত চলছে। দুপুরে আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নিহত নিবিড়ের চাচা জাকির খান বলেন, অপহরণকারীরা গত চার বছর যাবত আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। নিবিড়কে নির্মমভাবে তারাই হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই।
জাজিরা সময়