সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গতকাল সোমবার রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলা দুটি করা হয়। মামলা দুটির বাদী সংস্থার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম।
কবির আহমেদের বিরুদ্ধে মামলায় এক কোটি আট লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং এক কোটি ৩০ লাখ ৯৭ হাজার টাকার সম্পদের ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
কবির আহমেদের মামলার এজাহারে বলা হয়, তাঁর দুই কোটি ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে তিনি সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। তিনি ২০১৪-১৫ করবর্ষ থেকে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত ২০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয় দেখান। পারিবারিক ব্যয়সহ তাঁর অর্জিত সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ৬৬ হাজার টাকা।
তাঁর সম্পদ যাচাই করে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের উত্স পাওয়া যায় এক কোটি ৯১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। বাকি এক কোটি আট লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের বৈধ উত্স দেখাতে পারেননি তিনি।
আরেক মামলার এজাহারে বলা হয়, বদরুন নাহার তাঁর সম্পদ বিবরণীতে আট কোটি ৬০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাই করে তাঁর নামে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের সন্ধান পায় দুদক।
সম্পদ বিবরণীতে তাঁর তিন কোটি ৭৯ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও অনুসন্ধানে এক কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ঋণের সত্যতা পাওয়া যায়। বদরুন নাহারের এক কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার দায়-দেনা বাদে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় সাত কোটি ৯৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তাঁর সম্পদ বিবরণীতে ২০১৪-১৫ করবর্ষ থেকে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পারিবারিক ব্যয় দেখানো হয়।
পারিবারিক ব্যয়সহ তাঁর অর্জিত মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় আট কোটি ১৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৩৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের।
বাকি পাঁচ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের কোনো বৈধ উত্স্য তিনি দেখাতে পারেননি।
কবির আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় এবং বদরুন নাহারের বিরুদ্ধে একই আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলা করা হয়।