জাজিরায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

লেখক:
প্রকাশ: জুন ১, ২০২৩

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আমজাদিয়া একাডেমি স্কুলের মারিয়া(ছদ্মনাম (১৪) নামের এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এসেছে ঐ স্কুলের মাসুদুর রহমান নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০মে) সকাল ৯টার দিকে আমজাদিয়া একাডেমী স্কুলের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হাজী জৈনুদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামের মৃত নুরু মিয়া ঘড়ামির ছেলে মাসুদুর রহমান(৩২)গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমজাদিয়া একাডেমী স্কুলের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারিয়া (ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

এক সময় ঐ শিক্ষার্থী ধস্তা-ধস্তির এক পর্যায়ে শিক্ষক মাসুদুরকে ছিটকে ফেলে পালিয়ে আসে। এরপরে কান্না করে বান্ধবীদেরকে ঘটনাটি জানালে তারাও কান্না করে দেয়। তাদের কান্না দেখে তাদের সহপাঠীরা কান্নার কারন জানতে চাইলে তারা উক্ত ঘটনাটির বিষয়ে জানায়। এরপর স্কুলের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানায় এবং ৩১ মে সকল শিক্ষার্থীরা মিলে মানব বন্ধন করে। মানব বন্ধনকালে পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং স্কুল কমিটির সভাপতি আলমগীর ঢালী শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন যে, তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্কুলে যাওয়ার পরে দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র।স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি আলমগীর ঢালীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং স্কুল শিক্ষক বৃন্দ সম্মিলিত হয়ে উক্ত বিষয়টির প্রতি আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করার জন্য স্কুল প্রধানের কক্ষে বৈঠকে বসেছে। তাদের বক্তব্য নেয়ার কথা বললে তারা বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রী বলেন, গত ৩০মে (মঙ্গলবার) আমি প্রাইভেট পড়ার জন্য স্কুলে গেলে মাসুদ স্যার আমাকে অফিস কক্ষে ডাকেন। স্যার ডাকছেন তাই কোনো কিছু না ভেবে সেখানে যাই। কিন্তু অফিস কক্ষে যাওয়ার পর তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন এবং আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একসময় আমি দৌড়ে বাইরে চলে আসি এবং ঘটনাটি আমার বান্ধবীকে জানাই।

ছাত্রীর বাবা শফিক মুন্সি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান ও স্কুল কতৃপক্ষের সদস্যরা মামলা মোকাদ্দমা করতে না করেছেন। তারা আমাকে বলেছেন যে তারা ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে বিচার করবেন।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষক মাসুদুর রহমান যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই। সে যেন ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ না করতে পারে।

এ বিষয়ে জানার জন্য শিক্ষক মাসুদুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন তার স্বামী ঢাকা গেছেন কাজে। এমন কি মাসুদুর রহমান কে একাধিক বার কল করেও তার সাথে যোগাযোগ করা যায় নি।

জাজিরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজ উদ্দৌলা বলেন,বিষয়টি আমি ইতি মধ্যেই শুনেছি ।তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পদ্মা দক্ষিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উক্ত ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানতেন না। আজকে জানার পরে আসামীকে ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছেন।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল বলেন, আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।