মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ,প্রতিষ্ঠাতা মহোদয়ের বাণী

লেখক:
প্রকাশ: মে ১, ২০২৩

মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজের যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে। ভবন উদ্বোধন হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এবং একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের নরকলিকাতা গ্রামে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। আমার মরহুম পিতা আব্দুল মজিদ ও মরহুমা মাতা জরিনা খাতুনের নামে স্কুল এন্ড কলেজের নামকরন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মূলনীতি চারটি ‘ শিক্ষা, নৈতিকতা, মানবতা ও দেশপ্রেম ‘ ।

শরীয়তপুর জেলার ছেলেমেয়েদের গুণগত মানের শিক্ষা প্রদান এবং মূূলনীতির আলোকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই আমার স্বপ্নের বাস্তবায়নেই এ প্রতিষ্ঠানের জন্ম।

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের নিমিত্তে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশের সুযোগ রেখে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। প্রশস্ত শ্রেণীকক্ষ, শ্রেণীকক্ষে সাউন্ড সিস্টেম, আধুনিক বিজ্ঞানাগার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, উন্নত ও সমৃদ্ধশালী লাইব্রেরী তৈরী করা হয়। দূর দূরান্তের  শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নয়টি স্কুল ও কলেজ বাস।  মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে এ সকল সুযোগ সুবিধা বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

লেখাপড়ার পাশাপাশি পাঠক্রম বহির্ভূত শিক্ষার (Extra curricula education) সুযোগ আছে। দশটি ক্লাব আছে। সেগুলো হলো- বিতর্ক ও বক্তৃতা ক্লাব, সাংস্কৃতিক ক্লাব, বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্লাব, গণিত অলিম্পিয়াড ক্লাব, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ক্লাব, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ কুইজ ক্লাব, আইসিটি ক্লাব, স্পোর্টস ও শৃংখলা ক্লাব, ফটোগ্রাফি ও ফাইন আর্টস ক্লাব। এসব ক্লাবের সদস্য হয়ে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অনুশীলনের মাধ্যমে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পায়। খেলাধুলার জন্য রয়েছে প্রশস্ত মাঠ। মাঠের শেষপ্রান্তে আছে সুদৃশ্যমান শহীদ মিনার। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয়। আছে স্কাউটিং, প্যারেড ও ডিসপ্লে অনুশীলনের ব্যবস্থা। বাংলাদেশ টেলিভিশন জাতীয় বাংলা ও ইংরেজী উভয় বিতর্কে অত্র প্রতিষ্ঠান প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান দখল করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

এ প্রতিষ্ঠানে একজন মেধাবী ও অভিজ্ঞ অধ্যক্ষের নেতৃত্বে বাহাত্তুর জন নবীন ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শিক্ষকমন্ডলী রয়েছে। তাঁদের আন্তরিক ও অক্লান্ত পরিশ্রমে এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষার্থীরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। তাদের সামনে স্বপ্ন রয়েছে। প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষা যথা-পিইসি, জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে রেকর্ড সংখ্যক জিপিএ-৫.০০ এবং বৃত্তি পেয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটির পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ও বিভিন্ন অঙ্গনে সফলতাসহ সার্বিক বিবেচনায় ২০২২ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে যা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরিচালনা পর্ষদ সহ সকলকে গৌরবান্বিত করেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা রেখে তাঁদের ছেলেমেয়েদেরকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে আমাদেরকে কৃতার্থ করেছেন। আমরা তাঁদেরকে জানাই ধন্যবাদ।

এ প্রতিষ্ঠান নির্মানে আমার সুহৃদ অনেক শিক্ষানুরাগী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও দানশীল ব্যক্তি সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। আমি গভীরভাবে তাঁদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।

প্রতিষ্ঠানের ঊষালগ্ন থেকেই তৎকালীন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ বাহিনীর পরিশীলিত মানসিকতার অনেক কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসনিক ও শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ,  রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এলজিইডির প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান, মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টিগণ সর্বোপরি সর্বস্তরের জনসাধারণের পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগিতা পেয়েই প্রতিষ্ঠানটি আজকে এ পর্যায়ে এসেছে। আমি তাঁদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।

সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা ও  প্রচেষ্টায় এ প্রতিষ্ঠান ইহার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে আরো উন্নতির শিখরে পৌঁছে  অত্র অঞ্চলের জনপদকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবে, তৈরী করবে আলোকিত মানুষ ও আলোকিত সমাজ  এ প্রত্যাশা হোক চিরন্তর।